০৪:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদাদাবি’র প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় সংবাদ সম্মেলন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদাবির অভিযোগ উঠেছে। এঘনায় শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্টান আর রাদ কর্পোরেশনের এডমিন ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রহমান।
কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদাদাবি’র প্রতিবাদে অভিযোগ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি  বুডিগোয়ালিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান আর রাদ কর্পোরেশনের এডমিন ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রহমান জানান, আর রাদ কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ নৌ বাহিনী যৌথ চুক্তির মাধ্যমে জাইকার অর্থায়নে পাওবি’র-১ এর শ্যামনগর উপকূলীয় পাঁচটি স্থানে নদী শাসনের কাজ পেয়েছে। তার-ই ধারাবাহিকতায় সেখানে কাজ চলমান রাখে। প্রকল্প শুরু থেকে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে আসছে। এই কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদান বুয়েট পরীক্ষাগারে কৃতকার্য হওয়ার পরে কাজে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া কাজটি জায়কার অর্থায়নে হওয়ায় জায়কার প্রতিনিধি দল প্রতিমুহূর্তে এখানে পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি দল বিষয়টি মনিটরিং করেন।  সেক্ষেত্রে এখানে কোন প্রকার অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি করার কোন সুযোগ থাকে না। তাছাড়া ভালো সুনামধারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কখনো অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি করে না। তবে অতি সম্প্রতি আর রাদ কর্পোরেশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু দুষ্কৃতিকারী লোক মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। এখানে প্রকল্পের কাজ নির্বিচ্ছিন্নভাবে চলমান রাখলেও গত ৫ আগস্টের পর দেখা দেয় নানা ধরনের বিপত্তি। স্থানীয় বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হাজি ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। একই সঙ্গে প্রকল্প এলাকায় নজরুল হাজিকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। চাঁদার টাকা না দিয়ে এখানে কিভাবে কাজ সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন, একই সঙ্গে প্রকল্পের অফিসের সমস্ত মালামাল লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। চেয়ারম্যান নজরুল হাজী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের জীবননাশের হুমকি দেন। তাতে করে কর্মচারী ও শ্রমিকরা ভীতিসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। চাঁদার ১২ লাখ টাকার পাশাপাশি কমিশনের টাকা পর্যায়ক্রমে দিতে হবে একই সঙ্গে আকাশ নীলা ইকো ট্যুরিজমে আর রাদ কর্পোরেশন ফিসারিশ এন্ড এগ্রো পার্কের নামে যে ঘের সরকারি বন্দোবস্তের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে সেই ঘেরেও একটি বড় অংশ থাকে দিতে হবে। অন্যথায় প্রকল্পের কাজ তিনি সম্পন্ন করতে দিবে না বলে জানিয়ে দেন। এ বিষয়ে গত ২২ আগস্ট প্রতিষ্টানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী সোনাকান্দা দপ্তরকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন,  তারপরেও নজরুল হাজী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা দাবিসহ হুমকি ধামকি অব্যাহত রাখলে গত ১১ সেপ্টম্বর শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বাহিনী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকল্প অফিস ভাঙচুর চালিয়ে প্রকল্পের সমস্ত কাজ বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে প্রকল্প কর্মকর্তা কর্মচারী সহ কর্মরত শ্রমিকদের কাজ না করার নির্দেশ দিয়ে যান। কোন উপায়ান্ত না পেয়ে সাতক্ষীরার সেনা ক্যাম্পের অধিনায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর হুমকি ধামকি উপেক্ষা করে প্রকল্পের কাজ চলমান রাখা হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামনগরে প্রকল্পের কাজ প্রদর্শনে আসলে উক্ত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চাঁদা প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন এবং তাদের কথা না শুনলে আক্রমণ হতে পারে বলে ভয়-ভীতি দেখান। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্যায়ের কাছে নত শিকার করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।  কোম্পানির সম্মান খুন্ন করতে ৫ মার্চ তাদের নিজস্ব লোক দ্বারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা দিলে থেমে যাওয়ার কথাও জানান। সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের দূর্গাবাটি এলাকার ও ইয়ার্ডের জায়গা তার নিজের বলেও দাবি করেন। তবে এই জায়গাটি এক নম্বর খাস খতিয়ানের সরকারি সম্পত্তি যেটা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন নেয়া হয়েছে। হাজী নজরুল প্রকল্পের অফিসের যেটা জায়গাটি নিজের বলে দাবি করে আসছেন প্রকৃতপক্ষে সে জায়গাটি তাহার নয় সংবাদ সম্মেলনে উনি যে দাগ নম্বর উপস্থাপন করেছেন সীট নং-৯ এ সে দাগ নম্বরটিও ভূল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের এলসি পাথর জাহাজ প্রকল্পের সাইটের প্রায় কাছাকাছি চলে আসছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে আমাদের আয়াত্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাথর পৌঁছাবে।  তাই আগামী সাত দিনের মধ্যেই কাজটি শুরু করা হবে। এসময় সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর সহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রাত হলেই সায়েস্তাবাদে গড়ে মাদকের সাম্রাজ্য

সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদাদাবি’র প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় সংবাদ সম্মেলন

Update Time : ০৭:২৯:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদাবির অভিযোগ উঠেছে। এঘনায় শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্টান আর রাদ কর্পোরেশনের এডমিন ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রহমান।
কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদাদাবি’র প্রতিবাদে অভিযোগ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি  বুডিগোয়ালিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারি প্রতিষ্টান আর রাদ কর্পোরেশনের এডমিন ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রহমান জানান, আর রাদ কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ নৌ বাহিনী যৌথ চুক্তির মাধ্যমে জাইকার অর্থায়নে পাওবি’র-১ এর শ্যামনগর উপকূলীয় পাঁচটি স্থানে নদী শাসনের কাজ পেয়েছে। তার-ই ধারাবাহিকতায় সেখানে কাজ চলমান রাখে। প্রকল্প শুরু থেকে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে আসছে। এই কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদান বুয়েট পরীক্ষাগারে কৃতকার্য হওয়ার পরে কাজে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া কাজটি জায়কার অর্থায়নে হওয়ায় জায়কার প্রতিনিধি দল প্রতিমুহূর্তে এখানে পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি দল বিষয়টি মনিটরিং করেন।  সেক্ষেত্রে এখানে কোন প্রকার অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি করার কোন সুযোগ থাকে না। তাছাড়া ভালো সুনামধারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কখনো অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি করে না। তবে অতি সম্প্রতি আর রাদ কর্পোরেশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু দুষ্কৃতিকারী লোক মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। এখানে প্রকল্পের কাজ নির্বিচ্ছিন্নভাবে চলমান রাখলেও গত ৫ আগস্টের পর দেখা দেয় নানা ধরনের বিপত্তি। স্থানীয় বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হাজি ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। একই সঙ্গে প্রকল্প এলাকায় নজরুল হাজিকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। চাঁদার টাকা না দিয়ে এখানে কিভাবে কাজ সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন, একই সঙ্গে প্রকল্পের অফিসের সমস্ত মালামাল লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। চেয়ারম্যান নজরুল হাজী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের জীবননাশের হুমকি দেন। তাতে করে কর্মচারী ও শ্রমিকরা ভীতিসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। চাঁদার ১২ লাখ টাকার পাশাপাশি কমিশনের টাকা পর্যায়ক্রমে দিতে হবে একই সঙ্গে আকাশ নীলা ইকো ট্যুরিজমে আর রাদ কর্পোরেশন ফিসারিশ এন্ড এগ্রো পার্কের নামে যে ঘের সরকারি বন্দোবস্তের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে সেই ঘেরেও একটি বড় অংশ থাকে দিতে হবে। অন্যথায় প্রকল্পের কাজ তিনি সম্পন্ন করতে দিবে না বলে জানিয়ে দেন। এ বিষয়ে গত ২২ আগস্ট প্রতিষ্টানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী সোনাকান্দা দপ্তরকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন,  তারপরেও নজরুল হাজী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা দাবিসহ হুমকি ধামকি অব্যাহত রাখলে গত ১১ সেপ্টম্বর শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বাহিনী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকল্প অফিস ভাঙচুর চালিয়ে প্রকল্পের সমস্ত কাজ বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে প্রকল্প কর্মকর্তা কর্মচারী সহ কর্মরত শ্রমিকদের কাজ না করার নির্দেশ দিয়ে যান। কোন উপায়ান্ত না পেয়ে সাতক্ষীরার সেনা ক্যাম্পের অধিনায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর হুমকি ধামকি উপেক্ষা করে প্রকল্পের কাজ চলমান রাখা হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামনগরে প্রকল্পের কাজ প্রদর্শনে আসলে উক্ত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চাঁদা প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন এবং তাদের কথা না শুনলে আক্রমণ হতে পারে বলে ভয়-ভীতি দেখান। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্যায়ের কাছে নত শিকার করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।  কোম্পানির সম্মান খুন্ন করতে ৫ মার্চ তাদের নিজস্ব লোক দ্বারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা দিলে থেমে যাওয়ার কথাও জানান। সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের দূর্গাবাটি এলাকার ও ইয়ার্ডের জায়গা তার নিজের বলেও দাবি করেন। তবে এই জায়গাটি এক নম্বর খাস খতিয়ানের সরকারি সম্পত্তি যেটা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন নেয়া হয়েছে। হাজী নজরুল প্রকল্পের অফিসের যেটা জায়গাটি নিজের বলে দাবি করে আসছেন প্রকৃতপক্ষে সে জায়গাটি তাহার নয় সংবাদ সম্মেলনে উনি যে দাগ নম্বর উপস্থাপন করেছেন সীট নং-৯ এ সে দাগ নম্বরটিও ভূল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের এলসি পাথর জাহাজ প্রকল্পের সাইটের প্রায় কাছাকাছি চলে আসছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে আমাদের আয়াত্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাথর পৌঁছাবে।  তাই আগামী সাত দিনের মধ্যেই কাজটি শুরু করা হবে। এসময় সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর সহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।